চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম ডিপোর আগুন প্রায় নিভে গেছে, ডিপো ঝুঁকিমুক্ত

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম ডিপোর আগুন প্রায় নিভে গেছে, ডিপো ঝুঁকিমুক্ত
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম ডিপোর আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে এবং ঝুঁকিমুক্ত বলে দাবি করেছেন দায়িত্বরত সেনা কর্মকর্তা। অন্যদিকে, মর্মান্তিক এ ঘটনায় মর্গে পড়ে থাকা বহু লাশ এখনো শনাক্ত করা যায়নি। ইতিমধ্যে যারা স্বজনের লাশ জামা-কাপড় বা অন্য কিছু দেখে শনাক্ত করেছেন তাদেরও ডিএনএ পরীক্ষা শুরু করেছে প্রশাসন। সীতাকুণ্ড ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের সিনিয়র স্টেশন কর্মকর্তা নুরুল আলম দুলাল জানান, এখনো বেশ কয়েকটি কন্টেইনারের ভেতরে আগুন জ্বলছে। এই আগুন অনেকক্ষণ ধোঁয়া হয়ে থাকার পর আবার দাউ দাউ জ্বলে ওঠে। কন্টেইনারগুলোতে কেমিক্যাল থাকার আশঙ্কায় পানি দেওয়া যাচ্ছে না। সেগুলো আপনা আপনি জ্বলতে জ্বলতে নিভে যাবে। আর যেসব কন্টেইনারে গার্মেন্টপণ্যসহ অন্যান্য পণ্য রয়েছে সেগুলো পানিতে নেভানো হচ্ছে। শুধুমাত্র কেমিক্যালের উপস্থিতির কারণে আগুন কখন পুরোপুরি নিভে যাবে তা বলা যাচ্ছে না। তিনি আরো বলেন, সীতাকুণ্ডের কুমিরা এবং সদর ফায়ার স্টেশনের মোট ১০ কর্মী নিহত হয়েছেন। আমরা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। তাই অন্য ইউনিটগুলো নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। সাথে আছে সেনাবাহিনী, পুলিশসহ অন্য সংস্থাগুলোও। এদিকে, আগুন নিভতে যতো দেরি হচ্ছে ততোই উদ্বেগ বাড়ছে স্থানীয়দের মাঝে। সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, আগুন একবার নিভে যায়, আমরা আশ্বস্ত হই। অনেকক্ষণ পর আবার দেখি দাউ দাউ করে জ্বলে ওঠে। কেমিক্যালেই এসব হচ্ছে। এদিকে, আজ বেলা সাড়ে ১১টায় বিএম ডিপো ঝুঁকিমুক্ত জানিয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেছেন সেখানে দায়িত্বরত সেনা কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফুল ইসলাম। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আগুন প্রায় নিভে গেছে। যেটুকু আছে তা বিপজ্জনক নয়। এখন ডিপো ঝুঁকিমুক্ত। অন্যদিকে, এ ঘটনায় এখনো পর্যন্ত নিহত ৪১ জনের মধ্যে ১৬ জনের লাশ শনাক্ত করা যায়নি। সীতাকুণ্ড থানার ওসি (তদন্ত) সুমন বণিক বলেন, আগুনে বেশিরভাগ লাশই পুড়ে বিকৃত হয়ে গেছে। তাদের চেনা যাচ্ছে না। জামা কাপড় ও বিভিন্ন চিহ্ন দেখে মানুষ তাদের আপনজন বলে নিয়ে যাচ্ছেন। এ ক্ষেত্রে ভুল হবার সম্ভাবনা আছে। একজনের লাশ অন্যজন নিয়ে যেতে পারেন। তাই যারা লাশ নিচ্ছেন তাদেরও ডিএনএ সংগ্রহ করা হচ্ছে। আর যারা নেবেন তাদেরও ডিএনএ করা হবে। মৃত ব্যক্তির ডিএনএর প্রোফাইল তৈরি করা হচ্ছে। এছাড়া আজ বিকাল থেকে ঘটনার তদন্ত শুরু করবে ডিআইডির ফরেনসনিক বিভাগ সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ির বিএম ডিপোতে গত শনিবার রাতে একটি কনটেইনারে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। মুহূর্তেই আগুন ছড়িয়ে। এতে কেমিক্যালবোঝাই কন্টেইনারে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। এতে ২ শতাধিক মানুষ হতাহত হয়। ঢাকা ও চট্টগ্রামের ফায়ার সার্ভিস টিম অগ্নিনির্বাপনে কাজ শুরু করে। কিন্তু সেই ঘটনার তিন দিন পর, অর্থাৎ আজও সেই ভয়াবহ আগুন পুরোপুরি নেভেনি।